লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলা কাজির দীঘির পাড় সমাজ কল্যাণ উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে শ্লীলতাহানি ও যৌন নিপীড়নের অভিযোগে ঐ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মিজান রহমানকে গণধোলাই দেয় জনতা। 

ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল বুধবার সকালে ১নং দক্ষিণ হামছাদী ইউনিয়নে কাজির দীঘি বাজারে পৃর্ব পাসে। 

স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, বখাটে শিক্ষক মিজানকে গণধোলাই দেওয়ার পরপরই ঐ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিজাম উদ্দিনের নেতৃত্বে বিদ্যালয় অফিস কক্ষে ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মোরসেদ চৌধুরী ও স্থানীয় মেম্বার সহ কয়েকজন মাতাব্বর বসে তড়িঘড়ি করে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে । 

উক্ত বৈঠকে শিক্ষার্থীসহ তার অভিভাবক ও বখাটে শিক্ষক মিজান উপস্থিত ছিলেন। এলাকাবাসি আরো বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষক মিজান চরিত্রহীন, সে এর আগেও অনেক শিক্ষার্থীর চরিত্র হনন করেছে। অভিবাবকরা তাদের মেয়েদের ভবিষৎ এর কথা বিবেচনা করে নিরবে তা সহে গেছেন।

স্থানীয় সুশীল সমাজের ব্যাক্তিগণ বলেন, দেশের প্রচলিত আইনানুযায়ী মিজানের বিচার হলে অন্যান্য শিক্ষকরা সতর্ক হয়ে যেত। কিন্তু এখন এই বিষয়টি স্থানীয় ভাবে মিমাংসা করায় অপরাধী পার পেয়ে গেল, অন্যদিকে অপরাধ আরোও বেড়ে যাবে। 

শিক্ষার্থী জানান, কাজির দীঘির পাড় সমাজ কল্যাণ উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক মিজানুর রহমান ওনার প্রতিষ্ঠিত কোচিং সেন্টারের অন্যান্য শিক্ষার্থীদের ন্যায় আমি প্রাইভেট পড়তে আসতাম। বিভিন্ন সময়ে শিক্ষক মিজান আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করতে থাকেন । হাসিয়ে হাসিয়ে খারাপ কথা বলায় কেউ আমলে নেয়নি। ঘটনার দিন আমার সাথে থাকা অন্যান্য ছাত্রীদের ছুটি দিয়ে আমাকে বসতে বললেন। স্যারকে জিজ্ঞেস করলাম আপনি আমাকে কেন একা বসতে বললেন । জবাবে তিনি বলেন তোমার পড়া আরও বাকি আছে। এই সময় তিনি কুনজরে আমাকে স্পর্শ করার চেষ্টা করে আমি জোর করে তাকে ধাক্কা মেরে বাহিরে চলে আসি। 

শিক্ষার্থী আরো বলেন, এই বিষয়টি তার বড় ভাইকে অবগত করার পর। বড় ভাই বাজারে গিয়ে অভিযুক্ত মিজানকে বকাবকি করার এক পর্যায়ে স্থানীয় জনতা মিজানকে উত্তম মধ্যম দেয়। প্রধান শিক্ষক নিজাম উদ্দিন স্যার ও মাতাব্বরগন এই বিষয়ে যে সমাধান দিয়েছেন তাতে সুবিচার পাননি । 

এই বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক নিজাম উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, শিক্ষক মিজান ও শিক্ষার্থীর বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে। 


এই রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার শিপন বড়ুয়া বলেন এই বিষয়ে তিনি অবগত নয়। তবে এই ধরনের বিষয় কোন বৈঠকে সমাধান হয়েছে কিনা তা বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখবে পুলিশ। 

রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ বিষয় নিয়ে স্থানীয় বৈঠককে সালিশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি। বিষয়টি গুরুত্বের সহিত ক্ষতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।